আর জি কর মেডিকেল কলেজের এখন বর্তমানে কি অবস্থা? রাজ্যপালের কাছে ডাক্তাররা কি দাবি জানিয়েছেন ?

doctors-protest-violence-at-rg-kar-hospital-kolkata-rape-murder-case

 

ডাক্তার মৌমিতা দেবনাথ এর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে গোটা  রাজ্য তোলপাড়। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে গত ১৪ই আগস্ট বুধবার রাত সাড়ে এগারোটার পর থেকে টানা "মেয়েরা রাত দখল করো" মিছিল শুরু হয় সারা রাত পর্যন্ত মিছিল চলে। রাজ্যের প্রত্যেকটি মানুষই চায় দোষীরা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায়। 


আর জি কর মেডিকেল কলেজের এক নিষ্পাপ কোমল ফুলের মতো ডাক্তার মেয়েকে হারিয়ে সমস্ত রাজ্যের মানুষজন হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। এমনও হয়েছে অনেকেই ওই আরজিকর মেডিকেল কলেজে ডাক্তারি নিয়ে পড়ছে তাদেরকেও তাদের মা বাবা বলছে ডাক্তারি ছেড়ে বাড়ি চলে আসার কথা। কারণ তাদেরও মনে ভয় ধরে গেছে ডাক্তারি পাশ করতে গিয়ে তাদের সন্তানের যদি কিছু হয়। এইভাবে যদি সমাজ এগোয় তাহলে পুরো পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটি অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়বে।


দোষীদের শাস্তি দেবার জন্য গোটা রাজ্য সারারাত ধরে আন্দোলন করেছিল "মেয়েরা রাত দখল করো"। পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের প্রত্যেকটি প্রান্তে এই আন্দোলন হয়েছিল, ভারতবর্ষের পাশাপাশি দিল্লিতে এই আন্দোলন হতে দেখা গেছে। এমনকি প্রবাসে যে সমস্ত বাঙালিরা রয়েছেন তারাও এই আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। আন্দোলনে ডাক্তারি পড়ুয়া সহ সাধারণ জনগণ এবং যারা ডাক্তার হয়েছেন তারাও এই আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন।  


আন্দোলন চলার ঠিক এক ঘণ্টার মধ্যেই প্রায় ১০০০ জন মত দুষ্কৃতী এসে এই আন্দোলন ভঙ্গ করেছে। এরপরে দুষ্কৃতীরা এসে যে সমস্ত পুলিশরা বাধা দিচ্ছিল তাদেরকেও মারধর করেছে। আন্দোলনকারীদের বিচ্ছিন্ন করাই ছিল দুষ্কৃতীদের একমাত্র লক্ষ্য। শুধুমাত্র আন্দোলনই ভঙ্গই করেছে তা নয় এর পাশাপাশি আর জি কর হাসপাতালের কোটি কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ জনগণ ক্রোধে কাল বয়কট করবার ঘোষণা করেছেন, এমনকি আর জি করের বর্তমান প্রিন্সিপাল কে তারা আজ ১৫ ই আগস্ট এর দিনে ঘেরোয়া করেছেন, এবং সমস্ত প্রতিবাদী আন্দোলনকারীদের দাবি যে তাকে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেবার জন্য সাহায্য করতে হবে এবং আর জি কর মেডিকেল কলেজের প্রত্যেক নার্স, প্রত্যেক কর্মরত কর্মচারী ও ডাক্তারদের সিকিউরিটি দিতে হবে এবং সেটা লিখিতভাবে তাদেরকে জানাতে হবে।


পশ্চিমবঙ্গের ডাক্তাররা বলেছেন যদি দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি না পায় তাহলে তারা বয়কট করবে। ডাক্তারেরা যদি এইভাবে দিনের পর দিন বয়কট করতে থাকেন তাহলে সাধারণ জনগণের মধ্যে যারা অসুস্থ তারা চিকিৎসার পরিষেবা একদমই পাবেন না যার ফলে রোগীরা খুবই অসুবিধায় পড়বে।


মহিলা ডাক্তারের মৃত্যুকে ঘিরে যে পরিমাণে জনরোষ তৈরি হয়েছে তারা আবারও এইরকম আন্দোলন করতে পারে। একজন মায়ের কোল থেকে এক সন্তান হারানোর যে যন্ত্রনা সেটা প্রত্যেকটি মানুষের মনকে কাঁদাচ্ছে। তাই স্বাধীনতার দিনেও মানুষের চোখে জল। কেউই মেনে নিতে পারছেন না যে, আমাদের দেশটি স্বাধীন। এইভাবে যদি গোটা রাজ্যে অরাজকতা চলতেই থাকে তাহলে আমাদের রাজ্য আর কখনোই উন্নতির দিকে এগোতে পারবে না।


আজ কিছুক্ষন আগে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস আরজি করে পৌঁছিয়েছেন এবং কাল রাতে দুষ্কৃতীদের তান্ডবের কথা ডাক্তাররা রাজ্যপালকে জানিয়েছেন এবং ডাক্তারদের সিকিউরিটির দাবি জানিয়েছেন। 


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.